Thursday, June 28, 2018

                       "বীর"
বীর কাহারে কয়?
সেই কি বীর যে সাম্রাজ্য করিয়াছে জয়?
বীর তাহারে কয়,
শত সহস্র নরনারীর যে হৃদয় করিয়াছে জয়।
বীর সে নয়,
লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অত্যাচারে লিপ্ত যে হয়।
বীর সেই হয়,
অত্যাচারীকে বধ করিয়া যে নারীকে করিয়াছে নির্ভয়।
বীর সবাই নয়,
অত্যাচারে অতিষ্ট সমাজেই তার জন্ম হয়।
বীর বড়ই দয়ালু হয়,
বীর কোনো দেবদুত নয়, সাধারণ জন হয়।
দুধর্ষ কোনো লড়াকু বীর নয়,
রাষ্ট্র ভক্তি অটুট যাহার সেই ত বীর হয়।
পরাধীন ভুমি একা তলোয়ার তুলি,গড়িয়া সৈন্যদল
মহারণে তেজিয়ান, কৌশলে যার করায়ত্ত বিজয়।
ধর্মানুরাগী, ন্যায়বৎসল, কীর্তি যাহার অক্ষয়,
হিন্দু হৃদয় সম্রাট বীর শিবাজীর জয়।।
                       "শুভম"

                   "বলিদান"
বঙ্গভুমি ভারতভূমি আছে আজো একসাথে,
অসমবাসী লিপি পেলো কোন বিধাতার আশীর্বাদে।
প্রয়াস কার ছিল, কে করেছিল সংগ্রাম,
কিসের জন্য বিশ্বজুড়ে আজ ভারতের জয়গান।
তিনশ সত্তর হঠাও বলে আজ সবাই দিচ্ছে নারা,
ষাট বছর রাখলাম পুষে দেশের ক্ষতি করলো যারা।
প্রথম বিরোধ কার ছিল কাশ্মীর নিতি নিয়ে,
কতজন জানে কে সে ছিল ভারত মায়ের ছেলে।
সেদিন যদি পুরো দেশবাসী করে দিত বিদ্রোহ,
তবে এতদিন সহস্র মায়ের কোল খালি না হতো।
সেদিন কিন্তু ভারত কেশরী বীরপুরুষের মতো,
একা লড়াই করেছিলেন করেননি মাথা নত।
বাংলার বাঘের পুত্র তিনি প্রতিজ্ঞায় অটল,
ক্ষমতালোভীরা নির্মমভাবে তাকে করেছিল কোতল।
লক্ষ লক্ষ দেশবাসী করেছিল চোখের জলে বিদায়,
শুনেছি নাকি সেদিনের কথা আজো অটলজি কে কাঁদায়।
বিদায় বেলায় ভারত কেশরী গিয়েছিলেন যে অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে,
আজ সেই শিখা সবচেয়ে দীপ্ত বিশ্বের দরবারে।
শক্ত হাতে ধরেছেন নরেন্দ্র উনার জ্বালানো শিখা,
স্বপ্নগুলো সত্য হবেই, বলিদান যাবেনা বৃথা।
আপনি আমাদের অহংকার আমাদের অভিমান,
বিশ্ববাসী রাখবে মনে আপনার মহৎ বলিদান।
                            "শুভম"
               "কলমওয়ালা রাজকুমার"
সামনের দিকে একটু ঝুকে হাত দুটি পেছনে রেখে,
ধুসর রঙের জোব্বা গায়ে সপ্রতিভ চোখ মেলে দেখছেন কি আমার পানে!
মুখ ডাকা দাড়ি গোফে, দীর্ঘদেহী দাঁড়িয়ে আছেন হলঘরের ফোটোফ্রেমে,
কেউ বলে রবি ঠাকুর কেউ বলে গুরুদেব, মা বলেন জোড়াসাকোর কলমওয়ালা রাজকুমার,
তুমি নোবেল জয়ী বিশ্বকবি,তুমি ভারতবাসীর অহংকার।
তোমার রচনা তোমার কবিতা,গল্প,গান আর উপন্যাস, তোমার কলমের তীক্ষ্ণ ধার যেনো বিপ্লবীদের তলোয়ার।
তোমাকে জানার অনেক বাকি জানলে হব ডিগ্রিধারী।
কবিতা নয় জন্মদিনে হে মহামানব তোমায় আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।
                             "শুভম"

                      "অবহেলিত"
জীর্ণ শীর্ণ কায়া উষ্কখুষ্ক চুল,
বসিয়া আছো নিরবে তুমি যেন নাহি কোনো কুল।
কি অপরাধ, কেনো দুর্দশা, এ কি ভাগ্যের পরিহাস,
দরিদ্রতা, অসুস্থতা, আজিবনের বনবাস।
কর্মফল নয়, আমি জানি এ সমাজের দেওয়া ক্ষত,
তুমি শিক্ষা থেকে শতকোষ দূরে বাবুদের বাগানে কর্মরত।
দলিত দলিত বলে চিৎকার দেশজুড়ে আন্দোলন,
মুখোশধারী সমাজবাদীদের লোকদেখানো আস্ফালন।
কেউ শোনে না তোমার কান্না, কেউ দেয় না দাম,
সমাজবাদীরা বুজরুক সব, মিথ্যে সব জয়গান।
চোখের কোনের জল তোমার সঞ্চিত ব্রহ্ম কমন্ডুলে,
বুকের আগুন জ্বলছে রুদ্র ত্রিনয়নে।
সেই দিনের অপেক্ষায় নয় আমি তবু মনে আমার বিশ্বাস,
চোখের জলের অভিশাপে সব হবে ছারখার।
সেদিন কোথায় যাবে সমাজবাদী যেদিন হিসেব নিকেশ হবে,
যেদিন রুদ্র তাকাবেন আবার ত্রিনয়ন মেলে।।
                          "শুভম"
                         "রোমন্থন"
ঘোর কেটে গেছে তবুও ভোর আসেনি জিবনে,
তুমি রয়েছো সাথে তবু দিশাহারা প্রেম প্লাবনে।
প্রিন্সেপ ঘাটে নৌকার দুলুনিতে বলেছিলে কিছু কথা খাটি,
পায়ে ব্যাথা টনটন, তবুও মানেনা মন হাত ধরে আরো দুপা হাটি।
পার্ক স্ট্রীট এ বিরিয়ানি, শ্যামবাজারের কষা মাংস,
ব্যায়ন্ডের রুফটপে রাত্রির কলকাতা হয়েছিলাম দুজনেই দেখে মুগ্ধ।
মানিস্কয়ার নয় সিটি সেন্টার নয় ফেভারিট এক্রোপলিস,
সবশেষে পেটপুরে ভজহরি মান্নার দুর্দান্ত সেদ্ধ ইলিশ।
আজই আবার পড়ছে মনে, গতবছর আজকেরই দিনে,
বৃষ্টি ভিজে হাত আমার আঁকড়ে ধরে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে।
আজ এসব স্বপ্নমাত্র, তোমার স্মৃতিই সম্বল,
তাই মাঝেমাঝে বৃষ্টি পড়লেই করি স্মৃতি রোমন্থন।
                            "শুভম"

                          "তফাৎ"
শতশত ঘিয়ের বাতি জ্বলছে দেখো মন্দিরে,
এদিকে মন্টু কাজে ছুটেছে নুন মেখে ভাত খেয়ে।
আট বছরে বাবা হারিয়ে মন্টু সারাদিন কাজ করে,
সকালবেলা ডাস্টবিনে মন্টু কুকুরের সাথে লড়াই করে,
দুপুরবেলা মন্টু অলিগলি ঘুরে বেড়ায়,
নালার ধারে জঞ্জালে প্লাস্টিকের বোতল কুড়ায়।
বিকেল হয়েছে তাই ত মন্টু কল থেকে জল খেলো,
কেউ বোঝে না মন্টুর খিদে পেলো না তেষ্টা পেলো।
কাঠ কুড়িয়ে বিকেল বেলা অবশেষে ঘরে ফেরা,
দুবছরের ছোট্ট বোন চোখ টলটল মাথা নেড়া।
রোজের মত ছোট্ট বোনটি ভাইকে দেখে ছুটে আসে,
জড়িয়ে ধরে দাদাকে ঘেমো গালে নাকটি ঘষে।
বোন কিন্তু কোনদিন করেনি কো বায়না,
দাদার কোলে ঘুরতে চায় চকলেট ওর চাইনা।
মন্টুর মা কাজ করে শহরের বড়লোকের বাড়ি,
সেখানে কিন্তু চকলেট না পেলে ভাই বোনের আড়ি।
ভালোবাসা নয় চাহিদা এখানে প্রেমের অভিনয়,
খুশির নামে এখানে শুধু অর্থের অপচয়।
পেটে জ্বালা নিয়েও স্মিত হাসি মন্টুদের মুখে,
তোমার আমার থেকেও নির্মল হৃদয় আছে ওদের বুকে।।
                          "শুভম"
                          "তোমার জন্য"
আমার ভাবনা গুলো দায় সেরেছে, তোমার জন্য সখী,
আমার এম্বিশন ডিগবাজি খেলো তার জন্য তুমি দায়ী।
আমি সব ছেড়েছি আত্মহারা তোমার জন্য সখী,
আমি নিমেষে নিজেকে বদলে ফেলেছি দেখে নীলাভ আখি।
আমি বিমুখ হয়েছি সমাজ থেকে শুধু তোমার জন্য সখী,
আমি ক্যানভাসে নয় হৃদয় মাঝে তোমার ছবি আকি।
কিন্তু বিবেক করে দংশন মাঝে মাঝে মাঝ রাতে,
ঘুম ভাঙ্গে হয় ভীষণ কষ্ট সারাটা বুকের মাঝে।
তাই ত হয়নি তোমার সাথে পথচলা রইলো বাকি,
আমাকে আমার মায়ের প্রয়োজন তোমার থেকে অনেক বেশি।
                            "শুভম"

Wednesday, June 27, 2018

                     "নীরব আর্তনাদ"
কান্নাভেজা কন্ঠস্বরে তোমার আমার আকুল প্রার্থনা,
বুকের ভেতর মোচড় দিচ্ছে সব হারানোর যন্ত্রণা।
কিসের বলি কোলের শিশু কেন এই বঞ্চনা।
দখল করবে বনভুমি তাই ছিল পরিকল্পনা।
সবার মুখে ভয়ের ছায়া জিবনে ঘোর অমানিশা,
কে করবে প্রতিহত যদি নরপিচাশ দেয় আবার হানা।
শান্তনা নয় নিরাপত্তা চাই বনবাসীদের চাই মর্যাদা,
এই আশা নিয়ে বসে আছে হয়তো বোন গিনিরুমের আত্মাটা।
                              "শুভম"

"বিজ্ঞ"
জ্ঞান ঝাড়েন ফেসবুকেতে মহা বিজ্ঞ মহাশয়,
তার সমীক্ষায় নেতাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়।
নিজের বুথের নেইকো জ্ঞান কাজেও লবডংকা,
নেতার পিছে ঘুর ঘুর শুধু, মিথ্যে কথার বাজায় কেবল ডংকা।
ছাত্রাবস্থায় সংগঠনের দায়িত্ব যার ঘাড়ে,
সবার পাশে দাঁড়ায় সবার দিপদে ঝাপিয়ে পড়ে।
তার নাকি ভুল ধরেন সেই চাটুকারি বিজ্ঞ,
তিনিই শুধু সবজান্তা বাকীরা সব অজ্ঞ।
আমরা কিন্তু সব ছেড়েছি সংগঠনের জন্য,
এদিকে আমার বিজ্ঞ বাবুর ঘর কিন্তু পরিপুর্ণ।
                            "শুভম"

                            "কালাচাঁদ"
 শৈশবেতে মায়ের কোলে তোমার ছোয়া পেয়েছিলাম,
তোমার অঙ্গে আলোর জোয়াড় অবাক হয়ে দেখেছিলাম।
শুনেছিলাম কালাচাঁদের অধরে শোভে মোহনবাশী,
তোমার পানে তাকিয়ে দেখি বাঁশীর বদলে মধুর হাসি।
আমার কালাচাঁদের রুপ অপরূপ গলায় শোভে বৈজয়ন্তী মালা,
তোমার রুপের সেই গরিমা কন্ঠে তোমার তুলসী মালা।
রোগ ব্যাধি যায় সেরে তোমার কৃপা আশিষে,
সব দুখ হয় যে নাশ অমৃতসম মহাপ্রসাদে।
পথ হারিয়ে হাটছিলাম ক্লান্ত দেহে আমি,
আলোর ধারা উঠলো ফুটে পথ খুজে পেলাম শুনে তোমার বানী।
আমার মতো কতো দিশাহারা পেয়েছে তোমার আশিষধারা,
প্রভু তোমার চরনতলে থাকবো আমি ধুলি হয়ে,
আমার হৃদয়ে মাঝে থাকবে প্রভু এই আবদার প্রতি জনমে।
                            "শুভম"